20 May 2024, 11:58 pm

দেশের ১২টি জেলা ও ১২৩টি উপজেলাকে গৃহহীন-ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ আরও ১২টি জেলা ও ১২৩টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করেছেন। দারিদ্র্য বিমোচনে প্রধানমন্ত্রীর নকশা ও বাস্তবায়নে তাঁর স্বপ্নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় তিনি জমিসহ আরও ২২ হাজার ১০১টি বাড়ি বিতরণ করেন।
আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে সুবিধাভোগীদের মধ্যে বাড়ি বিতরণ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে বলেন, ‘আমি দেশে আরও ১২টি জেলা ও ১২৩টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত
ঘোষণা করছি।’
যারা জমিসহ বাড়ি পেয়েছেন তাদেরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এইসব বাড়ি আপনাদের মর্যাদা বাড়াতে সাহায্য করবে’।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যাদের জন্যে তাঁর সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন সেসব মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের প্রচেষ্টা দেখে তাঁর আত্মা খুশি হবে।
তিনি যারা বাড়ি পেয়েছেন তাদের বাড়ির ভিতরে এবং আশপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে এবং বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে কেউ যেন গৃহহীন ও ভূমিহীন না থাকে তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী তাঁর উদার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সরকারি খরচে নির্মিত বাড়িগুলো বিতরণ করেন।
নতুন ঘোষণায় চতুর্থ ধাপে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের দ্বিতীয় দফায় ২১টি জেলা ও ৩৩৪টি উপজেলা গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত হয়েছে।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে মোট উপকারভোগী পরিবারের সংখ্যা এখন দুই লাখ ৩৮ হাজার ৮৫১ তে দাঁড়িয়েছে।
নতুন ১২টি ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত জেলা হলো: মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ি, ময়মনসিংহ, শেরপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, কুষ্টিয়া, পিরোজপুর ও ঝালকাঠি।
যে ১২৩টি ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত উপজেলা হল: শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট; কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর, নিকলী, হোসেনপুর, বাজিতপুর, মিঠামইন ও করিমগঞ্জ; টাঙ্গাইলের ঘাটাইল, নাগরপুর, মির্জাপুর, কালিহাতী ও বাসাইল; মানিকগঞ্জের শিবালয়, হরিরামপুর ও সদর; মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর ও টঙ্গীবাড়ি; রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ; নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার ও সদর; ফরিদপুরের বোয়ালমারী, চরভদ্রাসন, ভাঙ্গা ও সদর; ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ, হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া, গফরগাঁও, মুক্তাগাছা ও সদর; শেরপুরের শ্রীবরদী ও সদর; জামালপুরের ইসলামপুর ও সরিষাবাড়ী; কক্সবাজারের পেকুয়া, উখিয়া ও টেকনাফ; চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও আনোয়ারা; চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ ও কচুয়া; নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ, সোনাইমুড়ী, চাটখিল, সেনবাগ ও সদর; কুমিল্লার নাঙ্গলকোট, বরুড়া, হোমনা, তিতাস, মেঘনা ও বুড়িচং; ফেনীর দাগনভূঁইয়া, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী; রংপুরের বদরগঞ্জ; দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ, বীরগঞ্জ, চিরিরবন্দর, পার্বতীপুর, ফুলবাড়ি, বিরামপুর, হাকিমপুর, ঘোড়াঘাট ও সদর।

অন্য উপজেলাগুলো হলো- ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ, রানীশংকৈল ও সদর; নীলফামারীর ডোমার ও জলঢাকা; নওগাঁর আত্রাই, বদলগাছী, মান্দা, নিয়ামতপুর, পোরশা, সাপাহার ও সদর; সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, শাহজাদপুর ও কামারখন্দা; বগুড়ার গাবতলী, আদমদীঘি ও সদর; নাটোরের সিংড়া, নলডাঙ্গা ও সদর; পাবনার চাটমোহর, বেড়া, ফরিদপুর, ভাগুড়া ও সুজানগর; ঝিনাইদহে ঝিনাইদহ সদর; সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ ও সাতক্ষীরা সদর; যশোরে যশোর সদর; কুষ্টিয়ার খোকসা; খুলনার দিঘলিয়া; নড়াইলের কালিয়া; পিরোজপুরে পিরোজপুর সদর; ঝালকাঠির ঝালকাঠি সদর; পটুয়াখালীর কলাপাড়া ও গলাচিপা; বরগুনার পাথরঘাটা, বেতাগী, তালতলী; সিলেটের বিয়ানীবাজার, কোম্পানীগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জকিগঞ্জ, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার সদর, কুলাউড়া, বড়লেখা ও জুড়ী, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ, বাহুবল, লাখাই, হবিগঞ্জ সদর ও মাধবপুর ও শাল্লা  এবং সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা।
খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার আওতাধীন বারাসত সোনার বাংলা পল্লী আশ্রয়ণ প্রকল্প, পাবনার বেড়া উপজেলার আওতাধীন চাকলা আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আমানউল্লাহপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠান চলাকালে, ঘর পাওয়া, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিশিষ্ট নাগরিক ও সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ।
অনুষ্ঠানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ওপর একটি ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
এরআগে প্রধানমন্ত্রী আরও নয়টি জেলা- মাদারীপুর, গাজীপুর, নরসিংদী, পঞ্চগড়, জয়পুরহাট, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা ও মাগুরাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন ঘোষণা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) আশ্রয়ণ প্রকল্পটি এখন পর্যন্ত পাঁচ লাখ ৫৫ হাজার ৬১৭ পরিবারকে তাদের মালিকানায় দুই ডিসিমাল জমিসহ আধা-পাকা বাড়ি দিয়ে পুনর্বাসন করেছে। এসব বাড়িতে বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা বিনামূল্যে সংযোগ দেয়া হয়েছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্প ও অন্যান্য কর্মসূচির আওতায় ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৮ লাখ ২৯ হাজার ৬০৭টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসনে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পের কারণে চরম দরিদ্র ও ভাসমান মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে গৃহহীনদের পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের বাড়িঘর ও জমির মালিকানা দেওয়ার উদ্যোগ নেন।
আশয়ণ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হল প্রান্তিক মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জীবনযাত্রার মান উন্নতি ও দারিদ্র্য দূর করা।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 5038
  • Total Visits: 755926
  • Total Visitors: 2
  • Total Countries: 1127

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ সোমবার, ২০শে মে, ২০২৪ ইং
  • ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
  • ১২ই জ্বিলকদ, ১৪৪৫ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ১১:৫৮

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
20212223242526
2728293031  
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018